হিন্দু বিয়ে
আবহমান কাল থেকে সনাতন ধর্মীয় বিয়ের রীতিনীতি চলে আসছে । হিন্দু বিয়ে বেশ কয়েকটি আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সনাতন ধর্মীয় বিয়ে নিয়ে বিস্তারিত জানান, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত বিনয় কুমার গোস্বামী।
প্রথমত পাত্র-পাত্রীর সম্মতিতে একে অপরকে পছন্দের ভিত্তিতে অভিভাবকরা পঞ্জিকা থেকে শুভ দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। বিয়ের ক্ষেত্রে শুভ দিনক্ষণ বলতে পঞ্জিকায় বিয়ের যে দিন উল্লেখ থাকে তাকেই বোঝায়।
বিয়ের দিন ঠিক করার অর্থ হল পাত্রের পক্ষ থেকে পাত্রীকে বাগদান করা। আর বাগদান করা মানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা।
সাধারণত আশির্বাদ আসরে পাটিপত্র করা হয়। তবে অনেকে পাটিপত্র করে না। এরপর আসে আশির্বাদ আসর। এর প্রধান উপকরণ ধান, দূর্বা, প্রদীপ, চন্দন, পান, সুপারি ও বড় মাছ। পঞ্জিকা অনুসারে শুভদিন দেখে আশির্বাদ করা হয়।
বরপক্ষ কনেকে এবং কনেপক্ষ বরকে আশির্বাদ করে। আশির্বাদে অনেকে উপঢৌকনও দিয়ে থাকেন। বর-কনের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়, সেই প্রার্থনাই করা হয় আশির্বাদ অনুষ্ঠানে।
আশির্বাদের পর আসে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের জন্যও দিনক্ষণ আছে। এখানেও শুভ দিনক্ষণ দেখে গায়ে হলুদের জন্য হলুদ কোটা হয়। ৫ বা ৭ জন সধবা স্ত্রীলোক মিলে হলুদ কোটে। এই হলুদই পরে গায়ে হলুদের দিন গায়ে মাখানো হয়।
গায়ে হলুদের পর এবার বিয়ের অনুষ্ঠান। দুই পর্বের অনুষ্ঠানে একটি ‘সাজ বিয়ে’ অন্যটি ‘বাসি বিয়ে’। দুটি আসরই কনের বাড়িতে বসে। তবে কোনো কোনো সময় বাসি বিয়ে বরের বাড়িতেও হয়ে থাকে।
‘সাজ বিয়ে’ বিয়ের মূল পর্ব। এই পর্বেই কনে আর বরকে ৭ বার প্রদক্ষিণ করে বরণ করে নেয়। বরণ শেষে বর-কনে দুজনের দিকে শুভ দৃষ্টি দেয়, একই সময় মালা বদল করা হয়। পরে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে বর-কনের ডান হাত একত্রে করে কুশ দিয়ে বেধে দেন।
এভাবেই বিয়ের আসরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
No comments