সঠিক নিয়মে পড়াশোনা করার ৭টি টিপস 2
৩। বিভিন্ন সোর্স থেকে পড়ো
বুঝে বুঝে পড়ার একটি চমৎকার উপায় হচ্ছে একই টপিক বিভিন্ন সোর্স থেকে পড়া। অন্ধের হাতি দেখার গল্প মনে আছে তো? শুধুমাত্র একটি বই থেকে পড়তে গেলে তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। সুতরাং সম্ভাব্য সবরকম সোর্স থেকে শেখার চেষ্টা করো। বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করো, বিভিন্ন লেখকের বই থেকে পড়ো, বড় ভাই/আপুদের সাহায্য নাও। ইন্টারনেটে একটু
বাংলাদেশের 10 Minute School এ তোমাদের পাঠ্যবই এর টপিকগুলো খুব সহজভাবে মজা করে শেখানো হয়, সেখানের live class গুলোয় অংশ নাও, ব্লগ/ভিডিও ব্লগ গুলো দেখো, আশা করি টপিকটা আয়ত্ত করতে তোমার একটুও কষ্ট হবেনা! পড়ালেখা যে আদৌ কোন ক্লান্তিকর কিছু নয়, বরং দারুণ মজার একটা জিনিস, 10
৪। কাউকে শেখাও
আইনস্টাইন বলেন, “একটা বিষয় তোমার পরিপূর্ণভাবে আয়ত্ত হবে তখনই, যখন বিষয়টি তুমি কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারবে।”
পড়ালেখাকে যদি একটি গাড়ির সাথে তুলনা করো, তাহলে তুমি যখন একটি টপিক পড়লে, তখন সেটি হচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন। কিন্তু শুধু এটুকু দিয়েই তুমি কাউকে ঠিকভাবে বুঝাতে পারবে না টপিকটা। কেননা, কেবল ইঞ্জিন থাকলেই তো গাড়ি চলে না! গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশ – চেসিস, টায়ার ইত্যাদি সব মিলে যুক্ত হয়েই তৈরী হয় একটি গাড়ি।
যখন কাউকে বুঝাতে যাবে একটি টপিক, তখন লক্ষ্য করবে শুধু বইপড়া জ্ঞান দিয়ে কাজ হচ্ছে না। ঠিক গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মতো, সবগুলো ঠিকমতো জোড়া দিলে তবেই চলবে গাড়ি, সেরকম তোমার টপিকটার বিভিন্ন আঙ্গিকের উপর সার্বিক একটা ধারণা থাকতে হবে, এবং সেটা গড়ে উঠবে কাউকে শেখাতে গেলেই, টপিকটার উপর তোমার জ্ঞান অনেক গভীরে পৌঁছাবে তখন।
৫। নিবিড় মনোনিবেশ
একবার ভেবে দেখো তো, দিনে গড়ে কত ঘন্টা তুমি বইয়ের সামনে বসে কাটাও? এর মধ্যে কতটুকু সময় তোমার অখন্ড মনোযোগের সাথে পড়া হয়? খেয়াল করলে দেখবে, প্রচুর সময় হেলাফেলা করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। “জাস্ট ২ মিনিটের জন্য ফেসবুকে ঢুকবো!” “খেলার স্কোরটা দেখেই টিভি বন্ধ করে দিবো!” পড়তে বসলেই এমন অনেক ইচ্ছা কিলবিল করতে থাকে মাথার ভেতর। এই ইচ্ছাগুলো ঝেড়ে ফেলে দাও এখনই।
৬। ছোট ছোট লক্ষ্য তৈরী করোঃ
আমরা সবাই বছরের শুরুতে লক্ষ্য ঠিক করি, “এইবছর ফাটায়ে পড়াশোনা করবো!” এবং বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে সেটা “লক্ষ্য” হয়েই থেকে যায়, কার্যকরী আদৌ হয়ে উঠেনা! কেন এমনটি হয় কখনো ভেবে দেখেছো? আমরা ছোট থাকতে গুরুজনেরা আমাদের খাইয়ে পরিয়ে দিতেন, নিয়মিত পড়া আদায় করাতেন। এখন তুমি বড় হয়েছো, এখন আর কেউ প্রতিদিন তোমার পড়া ধরতে আসে না। তোমার সাফল্য ব্যর্থতার দায়ভার তোমার নিজের হাতেই।
প্রতিদিন ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করো। “আমি এই টার্মে ফার্স্ট হতে চাই!” এত দীর্ঘমেয়াদী প্ল্যানে না গিয়ে “আমি আজকে ম্যাথ অমুক চ্যাপ্টার কমপ্লিট করবো” এরকম একদিনের প্ল্যান ঠিক করো। এবং সেটা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত হাল ছেড়ো না। প্রতিদিন এরকম ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করতে করতে বছরের শেষে গিয়ে দেখবে সত্যিই
৭। পড়াশোনা হোক গল্পের, আনন্দের!
তুমি একদিন বাসে উঠে তোমার বন্ধুকে বললে, “এই জানিস! গতকাল কলেজের সামনে রাস্তায় কি কাহিনী ঘটেছে!” আমি বাজি ধরে বলতে পারি, বাসের সবাই সাথেসাথে কান খাড়া করে ফেলবে “কি কাহিনী ঘটেছে” সেটা শোনার জন্য! কারণটা খুব সোজা, আমরা সবাই গল্প শুনতে ভীষণ ভালবাসি! পড়াশোনাকে যখন সংজ্ঞা/ফর্মুলার নীরস জায়গা থেকে গল্পের ছাঁচে ফেলতে পারবে, দেখবে জিনিসটা আসলে কত মজার! গণিতের “x=?” এর সমাধান যেন গোয়েন্দা কাহিনীর “কে সেই কালপ্রিট?” বের করার মতোই! “ব্রেকিং ব্যাড” এর কল্যাণে রসায়নের ফর্মূলাগুলো তো এখন সবাই আগ্রহ নিয়েই শিখে!
ফিজিক্সের প্লবতার “ইউরেকা!” থেকে শুরু করে আতশ কাঁচের সাহায্যে আর্কিমিডিস কিভাবে রোমান যুদ্ধতরী পুড়িয়ে দিলেন সমুদ্রে -এরকম অজস্র ইন্টারেস্টিং গল্প আছে। এরকম সব সাবজেক্টেই অনেক মজার মজার গল্প, ঘটনা জড়িয়ে আছে। বাস্তব জীবনে চারপাশের উপকরণের সাথে যখন পাঠ্যবই এর টপিকগুলো মিলিয়ে গল্প তৈরী করতে শিখবে, দেখবে পড়ালেখার চেয়ে মজার আর কিছুই হতে পারে না!
সুতরাং আর নয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঢুলে ঢুলে বই মুখস্থ করা! এখন থেকে পড়ালেখা হবে আনন্দের উপকরণ, দারুণ ইন্টারেস্টিং একটি বিষয়। Don’t study “hard”, study “smart”!
No comments