Breaking News

সঙ্গীত স্বরগ্রামের বিজ্ঞান: পাশ্চাত্য সঙ্গীত

 

সঙ্গীত স্বরগ্রামের বিজ্ঞান: পাশ্চাত্য সঙ্গীত


  • 09 Sep 2022

    পদার্থবিদ্যার কিছু বিস্ময় 

    %e0%a6%b8%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a7%80%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9e
    %e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%ad%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4
    শুভা সামন্ত

    স্কটিশ চার্চ কলেজ

     
    যেকোনো একটি সাঙ্গীতিক স্বর (যেমন হারমোনিয়ামের “সা” অথবা “রে” অথবা “গা”) আসলে অনেকগুলো সুরের সমন্বয়ে তৈরী যাদের কম্পাঙ্ক f, 2f, 3f,⋯ এই শ্রেণীতে বাড়তে থাকে। এই একেকটি সুর হলো শব্দের একেকটি সাইন-তরঙ্গ (sine wave)। কোনো একটি স্বরে সর্বনিম্ন কম্পাঙ্কের (f) সুরটি সবথেকে জোরালো হয় এবং পরবর্তী কম্পাঙ্কের সুরগুলো উত্তরোত্তর কম জোরালো হতে থাকে। এই f কে বলা হয় স্বরটির মূলকম্পাঙ্ক (fundamental frequency) এবং পরবর্তী সুরগুলোকে বলা হয় সমমেল (harmonic)। এখন দুটি স্বরের মূলকম্পাঙ্কের অনুপাত যদি 2/1, 3/2, 4/3, 5/4,⋯ এইরকম দুটো ছোট ছোট পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসেবে লেখা যায়, তাহলে তাদের কিছু অপেক্ষাকৃত জোরালো সমমেলের কম্পাঙ্ক মিলে যাবে। এইরকম দুটি স্বর একসাথে বা একটির পর আর একটি খুব তাড়াতাড়ি বাজালে আমাদের কানে তাদের সঙ্গতি মধুর শোনায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই সুন্দর গাণিতিক-নিয়ম-মানা স্বর-সঙ্গতিই সঙ্গীতসৃষ্টির মূল উপাদান, তা পাশ্চাত্য সঙ্গীত হোক বা ভারতীয় সঙ্গীত। এই গাণিতিক নিয়মটি থেকেই স্বরগুলির অবস্থান (অর্থাৎ মূলকম্পাঙ্ক) নির্ণয়ের তত্ত্ব থেকে শুরু করে আরও নানা সাঙ্গীতিক ধারণার উৎপত্তি হয়েছে। আজকের পর্বে লেখিকা পাশ্চাত্য সঙ্গীতের পটভূমিতে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের এই আশ্চর্য প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আগামী পর্বে থাকবে ভারতীয় সঙ্গীত নিয়ে আলোচনা।

     
     

    আমি শুনব ধ্বনি কানে,
    আমি ভরব ধ্বনি প্রাণে,
    সেই ধ্বনিতে চিত্তবীণায় তার বাঁধিব বারে বারে।।’

    সুর ও স্বর

    আমরা সকলেই জানি সঙ্গীত হলো স্বরসমূহের এমন এক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রচনা যা মানুষের চিত্তকে প্রসন্ন করতে সক্ষম। কিন্তু প্রতিদিনের কথাবার্তায় “স্বর” শব্দটা আমরা নানাভাবে ব্যবহার করলেও সঙ্গীত ও শব্দবিজ্ঞানের (acoustics) চর্চায় এর একটা বিশেষ অর্থ আছে। সেই অর্থটা শুরুতে ছোট্ট করে জেনে নেওয়া যাক।

    একটিমাত্র কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দকে বলে সুর আর বিভিন্ন কম্পাঙ্কের কয়েকটি সুর একসাথে ধ্বনিত হলে যে শব্দের সৃষ্টি হয়, তাকে বলা হয় স্বর। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, সুরশলাকার কম্পনে সৃষ্ট শব্দ হলো সুর আর বিভিন্ন সাঙ্গীতিক যন্ত্র থেকে উদ্ভূত শব্দ হলো স্বর। তাহলে, যেকোনো স্বর অনেকগুলি পৃথক পৃথক কম্পাঙ্কের সুরের সমন্বয়ে গঠিত। সর্বনিম্ন মানের কম্পাঙ্কটিকে, যার মান ধরা যাক f_1মূলকম্পাঙ্ক বলা হয়। মূলকম্পাঙ্ক ব্যতীত অন্যান্য কম্পাঙ্কের সুরগুলিকে বলা হয় উপসুর বা overtone। আবার যেসমস্ত সুরগুলির কম্পাঙ্ক মূলকম্পাঙ্কের পূর্ণ গুণিতক (অর্থাৎ 2f_13f_1\cdots) তাদের সমমেল বা harmonic বলে। তাহলে বলা যায়, মূলকম্পনই হলো প্রথম সমমেল। স্পষ্টত সব সমমেলই উপসুর, কিন্তু সব উপসুর সমমেল নয়। যেমন কোনো ধ্বনিতে উপস্থিত একটি সুরের কম্পাঙ্ক যদি মূলকম্পাঙ্কের দেড় (1.5f_1) বা আড়াই গুণ (2.5f_1) হয়, তাহলে তাদের সমমেল বলা যাবে না, বলতে হবে উপসুর।

    সব সমমেলই (harmonic) উপসুর (overtone), কিন্তু সব উপসুর সমমেল নয়। কিন্তু একটি সাঙ্গীতিক স্বরের ক্ষেত্রে সবকটি উপসসুরই সমমেল হয়। সমমেলগুলির উপস্থিতিই সাঙ্গীতিক ধ্বনির শ্রুতিমধুরতার কারণ।

    কিন্তু একটি সাঙ্গীতিক স্বরের ক্ষেত্রে সবকটি উপসসুরই সমমেল হয়। অর্থাৎ যেকোনো একটি সাঙ্গীতিক স্বরে উপস্থিত সুরগুলির কম্পাঙ্ক মূলকম্পাঙ্কের পূর্ণ গুণিতক। সমমেলগুলির উপস্থিতিই সাঙ্গীতিক ধ্বনির শ্রুতিমধুরতার কারণ। তবে স্বরের কম্পাঙ্ক বলতে মূলসুরটির কম্পাঙ্ককেই বোঝানো হয়। স্বরের একাধিক কম্পনের মধ্যে মূলকম্পাঙ্কের কম্পনটি সবচেয়ে জোরালো এবং অন্যান্য কম্পনগুলির জোর ক্রমশ কমতে থাকে । প্রসঙ্গত, এই (f_12f_13f_1\cdots) শ্রেণিটিকে স্বরটির সমমেল-শ্রেণী বলা হয়।

    অঙ্কের ভাষায় দেখলে, একটি সাঙ্গীতিক স্বরের তরঙ্গরূপটি সময়ের সাথে পর্যায়বৃত্ত হয় (periodic in time)। সুতরাং Fourier শ্রেণীর তত্ত্ব অনুযায়ী তরঙ্গরূপটিকে অনেকগুলি sine এবং cosine তরঙ্গে ভেঙে ফেলা যায়, যাদের সবার কম্পাঙ্ক একটা মূলকম্পাঙ্কের পূর্ণ গুণিতক। এই sine ও cosine তরঙ্গগুলোই এক-একটা সুর। দেখা যাচ্ছে এক্ষেত্রে মূলকম্পন





Download File

ব্যতীত অন্য সবকটি উপসুরই সমমেল। 

পাশ্চাত্য সঙ্গীতের পরিভাষা

পাশ্চাত্য সঙ্গীতের ভিত্তি গঠন করেছে সাতটি “শুদ্ধ” স্বর যেগুলি চিহ্নিত করার জন্য ইংরাজী বর্ণমালার A থেকে G পর্যন্ত অক্ষর এবং ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যার রোমক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। সাতটি স্বরের সাধারণ নাম হলো Do, Re, Mi, Fa, Sol, La, Ti। স্বরগুলির সাধারণ ক্রম নিম্নরূপ:

CDEFGAB
IIIIIIIVVVIVII

এর মানে অবশ্য এই নয় যে, সবসময়ই Do মানে C, Re মানে D ইত্যাদি।  Do, Re, Mi, Fa ইত্যাদি যথাক্রমে B, C, D, E এই ক্রমেও হতে পারে। স্বরকে ইংরাজীতে বলা হয় নোট (note) । রোমক চিহ্ন I দ্বারা সূচিত প্রথম নোট (এখানে C) কে বলা হয় টোনিক (tonic)। উপরের সারিতে টোনিক থেকে শুরু করে স্বরগুলোর কম্পাঙ্ক ক্রমশ বাড়তে থাকে। B-এর পরবর্তী স্বরটিকে আবার C দিয়ে চিহ্নিত করা হয় এবং এই C এর কম্পাঙ্ক আগের C এর কম্পাঙ্কের ঠিক দ্বিগুণ হয়। C থেকে পরের C পর্যন্ত আটটি স্বরের সমষ্টি নিয়ে তৈরী হয় অক্টেভ (octave)। তাছাড়া, যেকোনো স্বরের দ্বিগুণ কম্পাঙ্কের স্বরটিকেও প্রথমোক্ত স্বরের অক্টেভ বলা হয়। 


  • No comments